রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে চার দফা প্রস্তাব দেবেন প্রধানমন্ত্রী

আজকের বাংলাদেশ রিপোর্ট:
প্রলম্বিত রোহিঙ্গা সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি এই বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চলমান অধিবেশনে চার দফা প্রস্তাব উত্থাপন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের একটি অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও ওআইসি সেক্রেটারিয়েট যৌথভাবে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে প্রস্তাবগুলো আমি জাতিসংঘের চলতি ৭৪তম অধিবেশনে উত্থাপন করব, সেগুলো উল্লেখ করছি। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে-
১. রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবর্তন বিষয়ে মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের রাজনৈতিক ইচ্ছা সুস্পষ্ট করতে হবে। এ জন্য রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কী করছে, সেটাও সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে।
২. বৈষম্যমূলক আইন ও চর্চা পরিত্যাগ করতে হবে। এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের উত্তর রাখাইন রাজ্যে ‘যাও ও দেখ’ এই নীতিতে পরিদর্শনের অনুমতি দিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই তাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে হবে।
৩. রাখাইন রাজ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেসামরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েন করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই রোহিঙ্গাসহ সবার নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
৪. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণ ও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতা দূর করা হয়েছে।
অতীতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই প্রস্তাবে কফি আনান কমিশনের সুপারিশসমূহের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নসহ রাখাইন রাজ্যে একটি বেসামরিক নিরাপদ পর্যবেক্ষণ এলাকা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট একটি রাজনৈতিক সমস্যা। এর মূল মিয়ানমারে গভীরভাবে প্রথিত। সুতরাং এ সংকটের সমাধান মিয়ানমারের ভেতরেই খুঁজে পেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে রোহিঙ্গা সমস্যার কোনো রকম সমাধান ছাড়াই আমরা আরও একটি বছর পার করে দিয়েছি। মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন রাজ্যে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, বেলজিয়াম, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, কুয়েত, সার্বিয়া, ফিলিপাইন ও গাম্বিয়া থেকে আসা অতিথিরা।